ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার ডুলাহাজারাতে ইয়াবা বাণিজ্য জমজমাট

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:yabaa
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ওপেন সিক্রেট ভাবে চলছে ইয়াবা ব্যাবসা। অভিযানে গুটি কয়েক ইয়াবা ব্যবসায়ী আটক হলেও তথ্য প্রমানের অভাবে গড ফাদাররা রয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
ডুলাহাজারা রংমহল নামক এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সংখ্যা অত্যন্ত হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবী করেন সচেতন লোকজন।
সম্প্রতি স্থানীয় রংমহল এলাকায় ৮ পেকেট অর্থাৎ প্রায় লক্ষাধিক টাকার ইয়াবা টেবলেট নিয়ে এলাকাবাসীদের মঝে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড রংমহল গ্রামের অলি বাপের জুম এলাকার ইসহাকের স্ত্রী ছকিনা খাতুন বলেন তাদের বড় কন্যা (প্রসঙ্গত কারণে নাম প্রকাশ করা হলো না)’র সাথে বিগত সাত বছর পূর্বে বিয়ে হয় ঈদগাঁওর পশ্চিম গোমাতলি গ্রামের মনির আহমদ নামের যুবকের সাথে। বিয়ের পর তারা জানতে পারে মনির আহমদ একজন সক্রিয় ইয়াবা ব্যবসায়ী। পরে সাংসারিক মনোমালিন্যের একপর্যায়ে গত মাসখানেক আগে ওই কন্যা রংমহল অলিবাপের জুম বাপের বাড়ি চলে আসে। আসার সময় স্বামীর রক্ষিত থাকা ৮ প্যাকেট ইয়াবা টেবলেট তার ব্যাগের মধ্যে রয়ে যায়।
এদিকে কিছুদিন আগে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী রংমহল হাতিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র নুরুল আবছার ওই দুই হাজার ইয়াবা টেবলেট তাদের কাছ থেকে সুকৌশলে নিয়ে নেয়। এবং তার সহযোগী স্থানীয় যুবক নুরুল কবির ও কামাল হোসেনের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক মরণ নেশা ইয়াবা টেবলেট এলাকায় বিক্রি করেন। অবশিষ্ট টেবলেটগুলো ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল আবছার তার অপর সহযোগী মামুন নামের যুবকের মাধ্যমে অন্যত্রে পাচার করে দেয়। মোঃ নুরুল আবছার দীর্ঘসময় ধরে ইয়াবা ও মাদক পাচার করে আসছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। মুটোফোনে জানতে চাইলে আবছার ইয়াবা ট্যবলেটগুলো পাচারের ব্যপারে সত্যতাও জানিয়েছেন এবং আরো বলেন ‘পথে পথে দাঁড়িয়ে নিয়মিত ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে আরো অনেকে।’
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানান ‘আমি মাদক জুয়া ইত্যাদির ব্যপারে অনেক বেশি সোচ্চার। অপরাধ যেই করুক তথ্য প্রমান পেলে কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। তবে এই ইয়াবা টেবলেট গুলো পাচারের ব্যপারে আমার কাছেও স্বীকার করেছে আবছার। কিন্তু দুই হাজার নয় সাড়ে নয়শ’র কথা জানিয়েছে সে। আমরা এনিয়ে এলাকায় বৈঠকেও বসছিলাম কিন্তু টেবলেটগুলো হাতেনাতে কারো কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।’ এলাকাবাসীর অভিযোগ সন্ধ্যার পর হলেই এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করছে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল আবছারের মতো ডজনাধিক সম্রাটের অবস্থান ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহলে। রহস্যজনক কারনে প্রশাসন তাদের দ্বারে কাছেও যেতে পারছে না। ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হাকিম জানান ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বেপরোয়ায় আমাদের এলাকার সুন্দর পরিবেশ দিন দিন অবনতি হচ্ছে। প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না নিলে ইয়াবার ছুবলে ধ্বংস হয়ে যাবে এলাকার যুব সমাজ। অপরদিকে এই দুষিত পরিবেশে সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করার বিষয়ে চরম চিন্তিত রয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।
ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন ‘আমি বিষয়টি খবর নিচ্ছি। ইয়াবা কারবারী যেই হউক আমি কাউকে ছাড় দেব না’। চকরিয়া থানার ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান বলেন ‘মাদক ও মরণনেশা ইয়াবা নিয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক জড়িতদের আটকের ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

পাঠকের মতামত: